My Personal Blog ...

প্রেতাত্মার দল

২৫ শে জুন।
সময়ের অন্তনিহিত অভিযাত্রায়
আরেকটি নতুন মাত্রা-
আরেকটি দৃশ্যভূমির পট-
আজকের এই ঘোর লাগা অমাবস্যা।
রাত্রি গভীর হয়-
থেমে যায় কোলাহল, কর্মচঞ্চলতা
থেমে যায় প্রকৃতির জৈবিক নিয়মের আর্তনাদ।
ঘড়ির কাটা চলছে আপন পথে
নীরবতার মধো জানান দেয়
রাত্রি ১০টা, ১১টা, ১২টা...।


এখন মধ্যরাত।
এখন সময় হয়েছে ‘তাদের’ প্রত্যাবর্তনের।
আজ তারা সবাই জাগবে, গাইবে, উল্লাসিত হবে
আলিঙ্গন করবে রাত্রির নীরবতার সাথে।


গোরস্থান ।
মৃত মানুষের অথবা মৃত মানুষের আত্মার বসতভূমি।
অন্ধকারের গর্ভ থেকে-
সদ্য নতুন, পুরাতন, জীর্ণ হয়ে যাওয়া
ধুলোয় অথবা ঘাসে আচ্ছাদিত কবর থেকে
জেগে উঠেছে আজ সকল
অতৃপ্ত আত্মা অথবা প্রেতাত্মার দল।
সন্মুখপানে চলছে তারা-
একটি গন্তব্যে-
একটি গন্তব্য; এখানেই আজ
রাত্রির দ্বি প্রহরের প্রথম ঘণ্টাতেই
অনুষ্ঠিত হবে সেই কাঙ্খিত ‘সময় পালা’।


জানালার ‘পরে অন্ধকার পটভূমি
নিষ্প্রভ অন্ধকার আকাশ।
মাঝে মাঝে দলছুট কোন উদাসী রাতের তারা
পশ্চিমাকাশে মেঘের আনাগোনায়
ভেসে উঠছে মৃত্যুর প্রতিচ্ছবি।
 হ্যাঁ, মৃত্যু চাই- বাস্তব মৃত্যু।
টেবিলের ‘পরে ছড়ানো-ছিটানো
ধুলোময়, ব্যর্থ, অর্থহীন সময়ের
এক বাস্তব অকাট্য দলিল।
আর একটি নীল পানীয়ের পেয়ালা- সায়ানাইড।


দ্বি প্রহরের ঘণ্টা বাজলো।
অসহনীয় নিরবতা- নিস্তব্ধতা।
প্রেতাত্মার দল পৌঁছে গেছে নাট্যমঞ্চে
এখানে আজ সবাই দর্শক- একজন অভিনেতা।
‘সময় পালা’ শুরু হলো।
অভিনেতা তুলে নিল নীল পানীয়ের পেয়ালা।

সময় স্তব্ধ।
প্রেতাত্মার দলের রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা-
লুটিয়ে পড়লো অভিনেতার দেহ-
জন্ম নিল আরেকটি প্রেতাত্মা।

প্রেতাত্মার দল উড়ে চলেছে অসীমের উদ্দেশ্যে
পিছনে ফিরে-
অন্ধকার সময়-

অবাক পৃথিবী, নির্বাক পৃথিবী। 


(২০০১)